কুরবানির ৩২ হাজার পশু নিয়ে বিপাকে লালপুরের খামারিরা



কুরবানির ৩২ হাজার পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন নাটোরের লালপুর উপজেলার খামারিরা। এবার কোরবানিকে সামনে রেখে লালপুরের খামারিরা ৩২ হাজারের বেশি গবাদি পশু উৎপাদন করেছেন। এসব পশু বিক্রির জন্য ক্রেতা খুঁজে পাচ্ছেন না তারা।


করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে দফায় দফায় লকডাউনের কারণে কোরবানির এসব পশু বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় তারা। গতবার ঈদে লোকসানের পর ঘুরে দাঁড়াতে চাইলেও সেই আশায় গুঁড়েবালি বলেই ধরে নিয়েছেন এখানকার খামারিরা। 


অবশ্য লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলছেন, লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে গবাদিপশুর হাট, থাকবে অনলাইনে পশু বিক্রির ব্যবস্থাও।


লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) শাম্মী আক্তার বলেন, কঠোর লকডাউনে কৃষকের কথা বিবেচনায় চলবে গবাদিপশুর হাট। আমি নিজেও হাট পরিদর্শন করেছি। হাটে পযাপ্ত জায়গা থাকায় আরো কিছু বাঁশ দিয়ে পশু রাখার জায়গা ফাকা ফাঁকা করে দিতে বলেছি। হাটে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে ইজারাদারকে নির্দেশ দিয়েছি। ইজারাদার এটা নিশ্চিত করবে। তা না হলে আমি এটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব। 


তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রেতারা হাটে আসতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে যানবাহন বন্ধ থাকায় হয়ত ক্রেতারা একটু বাধা গ্রস্থ হবে। সে ক্ষেত্রে আমাদের অনলাইন পশুর হাট রয়েছে, চাইলে তারা সেখান থেকে পশু নিতে পারেন। তবে এটা জেলা থেকে ব্যবস্থা করবে। এটা দুই একই চালু হবে।


উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসের তথ্য মতে, উপজেলায় এবার কোরবানির জন্য প্রস্তত হচ্ছে সোয়া ৩২ হাজারের বেশি পশু। এর মধ্যে গরু ১১ হাজার ৭২৮ টি, ছাগল ২০ হাজার ৩৩ টি ও মহিষ ৪৪৫ টি। যা গত বছরের তুলনায় মোট পশুর প্রায় এক হাজার পশু বেশি। আর এসব পশুর অধিকাংশই প্রস্তুত করা হয়েছে বাসা বাড়িতে। 


বাসা বাড়িতে গরু প্রস্তুত করেছন এমন অনন্ত ১০ জন কৃষকের সাথে কথা জানা গেছে ক্রেতা সংকটে গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা। তেমনি একজন উপজেলার দুড়দুড়িয়ার মাহাবুর রহমান। কুরবানি ঈদ সামনে রেখে দুইটি গরু প্রস্তুত করেছিলেন। ঈদ ঘনিয়ে আসলেও ক্রেতা পাচ্ছেন না তিনি। এখন ২টি গরু নিয়ে পড়েছেন দুশ্চিন্তায়।



উপজেলার কাজিপাড়া এলাকার 'হেরা এগ্রো এন্ড ফিশারিজ' খামারে কোরবানিতে বিক্রয় উপযোগী গরু রয়েছে ২০ টি। প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার গরু বিক্রি নিয়ে দিনরাত দুশ্চিন্তায় ভুগছেন খামারের মালিক আব্দুল মোতালেব রায়হান। গত কোরবানিতেও তিনি সুবিধা করতে পারেন নি।


উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সুমারী খাতুন বলেন, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পারিবারিকভাবে ও ক্ষুদ্র খামার কেন্দ্রিক পশু পালন করেন অনেকেই। এবছরও পশু বিক্রি করোনা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে। জেলা থেকে এবছরও অনলাইনে পশু কেনাবেচা করার ব্যবস্থা নিবে। আশা করছি এবছরও তারা লাভবান হবে। প্রাণী সম্পদ অফিসের লোকজন সব সময় পশু লালন-পালনকারীদের পরার্মশ দিয়ে যাচ্ছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post